ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো What is Freelancing?
কোনো নির্দিষ্ট ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে স্থায়ী ভাবে কাজ না করে স্বাধীন বা মুক্তভাবে ভাবে কাজ করাকে বুঝায়। যায়া এ ধরনের কাজ করে তাদের কে বলা মুক্তপেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সার।
ফ্রিল্যান্সিং করতে কি কি প্রোয়জন?
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য বেসিক কিছু দক্ষতার (Skill) দরকার হয়। যেমন কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং এর কাজগুলো সাধারণত বিদেশি বায়াররা হায়ার করে থাকেন, সে ক্ষত্রে ইংলিশে কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে চ্যাটিংয়ে সঠিকভাবে ইংরেজিতে কথা বলতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো What is Freelancing? ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ ফ্রিল্যান্সিং করে কী পরিমান টাকা উপার্জন করা সম্ভব?
উপযুক্ত শিক্ষা এবং মার্কেটপ্লেজে যেমন কাজের চাহিদা আছে সেরকম কাজের দক্ষতা ও অবিজ্ঞতার থাকলে ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকাও আয় করা সম্ভব। ফ্রিল্যান্সিং বলতে বোঝায় কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে পূর্ণকালীন পদ গ্রহণ না করে, চুক্তিবন্ধ কাজ করা।
(Freelancing) ফ্রিলান্সিং মানে মূলত কোন প্রতিষ্ঠানের অধীনে স্থায়ী না থেকে নিজের মত স্বাধীনভাবে কাজ করা। ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) এর ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে কোন ব্যাক্তি (person) তার নিজের দক্ষতা ও ( Skill) অবিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে আনলাইন ভিত্তিক কোন একটি সার্ভিস প্রধান করে থাকে।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, যখন কোন ব্যাক্তি তার নিজের দক্ষতা, শিক্ষা ও অবিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে কোন প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে বা ঘরে বসে থেকে একাধিক Buyer এর কাজ করে, তখন তাকে ফ্রিল্যান্সিং (freelancing) বলে।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ গুলো বেশিভাগ ক্ষেত্রেই ঘরে বসে থেকেই করা সম্ভব। তবে কিছু ক্ষেত্রে Buyer এর কাজ অফিসে গিয়েও কাজ করার প্রয়োজন হতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং (freelancing) করার জন্য কিকি প্রয়োজন?
অনেকেই বলেন যে, আপনার যদি কোন কাজের দক্ষতা থাকে এবং সেই কাজটি আপনি সফল ভাবে করতে সক্ষম হন। তবে মোবাইল ফোন দিয়েও ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব। তবে মোবাইল ফোনে ফ্রিল্যান্সিং করার ব্যাপারটি নির্ভর করে কাজের ধরনের উপর।
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কমবেশি প্রয়োজনিয় কিছু উপাদান বা ডিভাইসের প্রয়োজন হয়ঃ
যেমন,
১। কম্পিউটার বা ল্যাপটপ
২। মোবাইল ফোন
৩। ইন্টারনেট কানেকশন বা মডেম
৪। কাজের দক্ষতা ও অবিজ্ঞতা
৫। সঠিকভাবে কাজ সম্পূর্ণ করা
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেজ বা ওয়েবসাইটঃ
আনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করা জন্য অসঙ্গখ্য মার্কেটপ্লেজ বা ওয়েবসাইট আছে। তবে এত সব মার্কেটপ্লেজ বা ওয়েবসাইট এর মধ্যে কিছু মার্কেটপ্লেজ বা ওয়েবসাইট অন্যসব মার্কেটপ্লেজ বা ওয়েবসাইটের থেকে ফ্রিল্যান্সার খোঁজার ও ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে অধিক কার্যকর বলে প্রমাণিত।
ফ্রিল্যান্সিং করার সেরা মার্কেটপ্লেজ বা ওয়েবসাইটগুলোঃ
ফাইভারঃ সর্বনিম্ন ৫ ডলারের গিগ থেকে শুরু করে বিশাল অংকের গিগ পাওয়া যায় ফাইভার মার্কেটপ্লেজে। মুলত কন্টেন রাইটিং, গ্রাফিক্স বা লোগ ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং প্রভূতি ক্যাটাগরির ফ্রিল্যান্সিং কাজ ফাইভারে বেশ জনপ্রিয়। ফাইভারে ফ্রিল্যান্সারগন গিগ পোষ্ট করে এবং বায়াররা তাদের কাজ অনুযায়ী পছন্দের সেলার কে হায়ার করে। ফাইভারে পেমেন্ট হয় কাজ ভিত্তিক। পেপাল, পেওনিয়ার অথবা ব্যাংক ট্রান্সফার এর মাধ্যমে ফাইভার থেকে অর্জিত অর্থ তোলা যায়।
আপওয়ার্কঃ কাজভোত্তিক বা ঘন্টা ভিত্তিক পেমন্ট – উভয় ধরনের কাজই পাওয়া যায় আপওয়ার্কে। আপওয়ার্কে ফ্রিল্যান্সার যিনি খুজেন, তিনি কাজ পোষ্ট করেন। এরপর ফ্রিল্যান্সারগন পোষ্ট করা কাজের উপর রিকুরেষ্ট পাঠান। এরপর উক্ত বায়ারগন তার পছন্দের ফ্রিল্যান্সার কে খুজে নেন। আপওয়ার্ক থেকে অর্জিত অর্থ তোলা যায় পেপাল, পেওনিয়ার অথবা ব্যাংক ট্রান্সফার এর মাধ্যমে।
ফ্রিল্যান্সার ডট কমঃ ফ্রিল্যান্সারগন কাজ করে ঘন্টাভিত্তিক বা কাজের ধরনের উপর নির্ভর করে। বিশাল সংখ্যাক কাজ ও ফ্রিল্যান্সার নিয়ে গঠিত এই সাইটটি। ফ্রিল্যান্সার ডট কম থেকে অর্জিত অর্থ তোলা যায় পেপাল, স্কিল, পেওনিয়ার অথবা ব্যাংক ট্রান্সফার এর মাধ্যমে।
পিপল পার পাওয়ারঃ নামে পিপল পার পাওয়ার হলেও ঘন্টাভিত্তিক কাজের পাশাপাশি কাজভিত্তিক পেমেন্ট ও রয়েছে এই সাইটে। পিপল পার পাওয়ার থেকে অর্জিত অর্থ তোলা যায় পেপাল, স্কিল, পেওনিয়ার অথবা ব্যাংক ট্রান্সফার এর মাধ্যমে।
গুরু ডট কমঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডাটা-এন্ট্রি থেকে শুরু করে ওয়েবসাইট ডিজাইন পর্যন্ত সকল ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়া যায় গ্রুরু ডট কমে। এই সাইটে আপনি আপনার দক্ষতা, অবিজ্ঞতা ও কাছের উদাহরণ দিবেন। এর পর আপনাকে বায়ার খুজে নিবে। গুরু ডট কম থেকে অর্জিত অর্থ তোলা যায় পেপাল, স্কিল, পেওনিয়ার অথবা ব্যাংক ট্রান্সফার এর মাধ্যমে।
বিল্যান্সারঃ বিল্যান্সিং বাংলাদেশি মার্কেটপ্লেজ, বিল্যান্সারে পাওয়া যাবে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে শুরু করে বিশাল অংকের কাজ। এখানে কাজ ভিত্তিক পেমেন্ট সিস্টেম রিয়েছে। বিল্যান্সারে কাজের অর্জিত অর্থ তোলা যাবে বিকাশ এবং ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে, এর ছাড়াও বিল্যান্সার অফিয়ে গিয়েও সরাসরি টাকা উত্তলন করা সুযোগ রয়েছে।
What is Freelancing? ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কিভাবে শুরু করবেন?
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে চান? সেক্ষেত্রে অনুসরণ করতে পারেন নিম্ন বর্ণিত গাইডলাইন গুলো।
- এটা ঠিক করুন যে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে যে সময়ের প্রয়োজন তা প্রদানে আপনি কতটুকু সক্ষম? তাছাড়াও আপনি যদি ফুল টাইম কাজ করতে চান, সেক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং করে উপার্জন করা যে রিস্ক, সেটি মেনে নিতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে যাচাই করুন।
- উপরোক্ত বিষয় যদি মেনে নিতে পারেন, তবে আপনি কি ধরনের কাজ করতে সাচ্ছন্দ্যবোদ করেন সেই কাজের উপর প্রশিক্ষন নিয়ে দক্ষতা অর্জন করুন, অনলাইনে এবং অফলাইনে ভালোভালো অনেক প্রফেশনালস আছে তাদের কাছে আপনার পছন্দ মতো কাজটি শিখে নিতে পারনে অথবা ইউটিউবের সাহায্য নিয়েও নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারেন।
- আপনার যদি ফ্রিল্যান্সিং করার মতো কোন দক্ষতা ও অবিজ্ঞতা না থাকে, তাহলে আপনি সাচ্ছন্দবোধ করে এমন একটি কাজ বেচে নিন, অনলাইনে অথবা অফলাইনে আপনার পছন্দের কোর্সটি এবং সেই কাজের প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের দক্ষতা বাড়ান।
- দক্ষতা অর্জন সম্পূর্ণ হলে এবার কাজের জন্য উল্লেখিত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেজে খুলে ফেলুন আপনার ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট। আপনার কাজের উপর নির্ভর করে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখুন আপনার একাউন্টি। একেকটি মার্কেটপ্লেজ একেক ভাবে কাজ করে প্রত্যেকটি মার্কেটপ্লেজ এর নিয়মকানুন ভালো ভাবে বুঝার চেষ্টা করুন।
- শুরুতে ছোটখাট কাজ দিয়ে শুরু করতে পারেন, যখন আপনার রেটিং ভালো হবে তখন বড়সড় কাজ পেতে আর তেমন কোন বেগ পেতে হবে না।
- কিছুকাজ পাওয়া পর উল্লেখযোগ্য কাজগুলো নিয়ে তৈরি করুন আপনার ফ্রিল্যান্সিং পোর্টফোলিও, যা আপনাকে হায়ার করার ক্ষেত্রে বায়ারকে প্রভাবিত করবে।
- নিজের নেটওয়ার্ক বড় করা চেষ্টা করুন সবসময়, আপনার পরিচিতি যত বাড়বে। তত বেশি মানুষ আপনাকে চিনবে। সেক্ষত্রে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়বে।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ জনপ্রিয় অনলাইন কাজগুলো
ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে অসংখ কাজ রয়েছে, তবে কিছু কাজ বর্তমান ব্যাপক জনপ্রিয়। সব চেয়ে বেশি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ সমূহ হলোঃ
*ওয়েব ডেভেলপমেন্ট/কোডিং/প্রোগ্রামিং
*গ্রাফিক্স ডিজাইন
*ডিজিটাল মার্কেটিং
*ট্রান্সলেটর
*ভিডিওগ্রাফার
*এসইও প্রফেশনাল
*ডাটা এন্ট্রি
*এইচআর ম্যানেজার
*পিআর ও ব্রান্ডিং
*মার্কেটিং প্রফেশনাল
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেজগুলোতে সবধরনের কাজ থাকলেও উল্লেখিত দক্ষতার ফ্রিল্যান্সারগন সর্বাধিক কাজ পেয়ে থাকেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব সেক্টরে দক্ষতা অর্জন করতে হয় বলেই এর দাম বেশি। তবে এসব কাজ জনপ্রিয় হওয়ার ফলে এসব ক্যাটাগরির কাজ পাওয়াটাও কিছুটা মুশকিলও বটে তবে সঠিক ভাবে চেষ্টা করলে চিন্তার কিছু নেই।
একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হবেন কিভাবে?
একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে হলে কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখা হবে। চলুন জেনে যাক কিছু বিষয়ঃ
নিজের দক্ষতা, অবিজ্ঞতা ও শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার সক্ষতা কতটুকু তা নিশ্চত করুন। দক্ষতায় কমতি থাকলে তা বেশিবেশি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আয়ত্ব করার চেষ্টা করুন। একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে যেসব ভুল গুলো এড়িয়ে চলা দরকার সে সব ভুল সম্পর্কে সচেতন থাকা আবশ্যক।
- আপনার যোগাযোগ মাধ্যমকে সর্বদা উন্নত করার চেষ্টা করুন। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেজে অসংখ্য ধরনের মানুষের সাথে যোগাযোগ করার প্রোয়জন পড়ে। সেক্ষেত্রে সবার সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করুন। আপনার করণীয়গুলোকে মাথায় রেখে আপনার যোগাযোগ মাধ্যমকে আরও উন্নত করুন।
- আপনার কাজ ও কথাবার্তা – উভয় ক্ষেত্রে আপনার পেশাদায়িত্বকে (Professionalism) অন্তত গুরুপ্ত দিবেন। আপনার পেশাদায়িত্ব একই বায়ারকে বারবার আপনার কাজে ফিরিয়ে আনবে।
- সময়ের কাজ সময়ে করার চেষ্টা করুন। আপনি দিনে কত ঘন্টা কাজ করতে সাচ্ছন্দবোধ করেন এবং সেই কাজের ক্ষেত্রে বাধাগুলোকে পর্যালোচনা করে নিজেক উন্নত করার চেষ্টা করুন।
- ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আপনার যাত্রা যদি শুরু হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে আপনার ধৈর্য হারায় একটা সুযোগ থাকে। মনে রাখবেন কোন ভাবেই ধৈর্য হারানো যাবে না, নিজের উপর আত্মবিশ্বাস রাখুন এবং চেষ্টা চালিয়ে যান।
ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা উপার্জন (Income) করা সম্ভব?
ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় বা উপার্জন করা যাবে – এটি সম্ভত সব চেয়ে বেশি জিজ্ঞাসা করা প্রশ্ন। এর কোন নিদিষ্ট উত্তর নেই। ফ্রিল্যান্সিং করে আয় কয়া কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি যত বেশি দ্দক্ষতা অর্জন করবেন এবং যত বেশি কাজ পাবেন আপনার উপার্জন তত বেশি হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার – Freelancing Career in Bangladesh.
ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার বদৌলতের কারণে খুব সহজেই অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে বিভিন্ন ডিজিটাল স্কিল বা দক্ষতা। যার ফলে চাইলেই ঘরে বসে যে কেউ যখন তখন ইন্টারনেটের সাহায্যে শুরু করতে পারেন ফ্রিল্যান্সিং। সঠিকভাবে দক্ষতা অর্জন করে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেজ থেকে ইতিমধ্যে অনেক ডলার বা টাকা আয় করে ফেলেছে দেশের তরুণগণ। তাই সর্বোপরি বলা যায়, বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং একটি সম্ভাবনাময় সেক্টর। ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো read more: online jobs Freelancing
“সমাপ্ত”