গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২
২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের মতো ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষেও দেশের ২০ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যরা একত্রে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ নিয়েছে। কম ভোগান্তিতে পরীক্ষা অভিভাবক, শিক্ষকদের মধ্যে আশার সঞ্চারন ঘটালেও সব বিশ্ববিদ্যালয় একসাথে না পরীক্ষায় না আসাই তাদের হতাশ ও করেছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা আলাদা করে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছে ; যার ফলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি মোটেই কম হয়নি।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ কি বৈষম্য সৃষ্টি করছে? বিস্তারিত পড়ুন
১৯৭৩ সালের নিয়মানুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় গুলো আলাদা পরীক্ষা নিচ্ছে, যা কখনো কাম্য নয়। বড় বিশ্ববিদ্যালয় গুলো না আসায় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা তেমন সফল হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীদের আলাদা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা আলাদা ফরম পুরণ করতে হয়। যার ফলে সময়, অর্থ উভয়েরই ব্যয় বৃদ্ধি পাই ; যা শিক্ষার্থীদের জন্য হতাশাজনক। যদি ও গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ এ অন্তর্ভুক্ত সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ থাকছে।
প্রথমবার গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় নানান অসঙ্গতি ছিল, তন্মধ্য কেন্দ্র জটিলতা, ভর্তি পরীক্ষায় নানান ফি, ফলাফলে জটিলতা, আসন খালি থাকা অন্যতম। আসন খালি থাকা শেষপর্যন্ত অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন খালিই ছিল। ভর্তির কার্যক্রম এমন ভাবে ঠিক হয়নি যেন আসন খালি থাকে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পাবলিকে পড়লে জীবনের সর্বোচ্চ স্তরে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। তাই আসন খালি রেখে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা মোটেই ঠিক হবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম সেপ্টেম্বরে ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নভেম্বরে শুরু করে দিলেও, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ এ উত্তীর্ণরা এখনও উদ্বেগ, উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে, যেখানে তাদের সহপাঠীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। যার ফলে দেখা যাবে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সেমিস্টার শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ এর অংশগ্রহণকারীরা কেবল ক্লাস শুরু করছে ; যা বৈষম্যের নামান্তর! অর্থাৎ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ এর অন্তর্ভুক্ত সব বিশ্ববিদ্যালয় কে একই সাথে ক্লাস শুরু করানো উচিত অন্যদের তুলনায়। যদিও এটা কঠিন তবুও এর ফলেই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য সফল হবে। হাফ ছেড়ে বাঁচবে শিক্ষার্থীরা।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ মানবিক,বাণিজ্য ও বিজ্ঞান শাখার প্রতিটি ইউনিটের জন্য আলাদা ফি না করে একটা নির্দিষ্ট ফি নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত আবেদনের ক্ষেত্রে। অন্যথায় বৈষম্য সৃষ্টি হয়। অতীতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা আলাদা জেলায় পরীক্ষা হওয়ায় শিক্ষার্থীদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরতে হয়,ফলে স্বাভাবিক ভাবেই আশাব্যাঞ্জক পরীক্ষা অনেকেরই হয় না,কিন্তু গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ এর ফলে কিছুটা মুক্তি মিলেছে এই সমস্যা থেকে। যার ফলে তুলনামূলক স্বস্তি তে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অর্থ এবং সময় উভয়েরই অপচয় কমিয়েছে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ এ না আসা অনেকের কাছে ভুল সিদ্ধান্ত মনে হয়। তারা মনে করেন তাদের অজুহাতে অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলো ভর্তি পরীক্ষা থেকে ভবিষ্যতে নিজেদের পিছিয়ে নিতে পারে। তবে অধিকাংশ মানুষ, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ কে সময়োপযোগী ও সঠিক সিদ্ধান্ত মনে করেন।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ তবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার নেতিবাচক দিক হলো,শিক্ষার্থীদের কাছে মাত্র একটি সুযোগ থাকে। যার ফলে সে কোনো কারণে পরীক্ষা মিস করে গেলে তার আর সুযোগ থাকে না। তাছাড়া একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা খারাপ হলে নতুন করে প্রিপারেশন নিয়ে আবার অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকে না। তবে শিক্ষার্থীদের ফরম তোলার জন্য অর্থ, যাতায়াত খরচের মতো ক্ষেত্রে ব্যয় কমাতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা এর বিকল্প নেই।
দেশে অনুমোদিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৩ টি, তন্মধ্যে ২২ সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ৩ টি ইউনিটের আলাদা তিন দিনে সম্পন্ন হয়। তিনটি প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় একই দিনে ও কৃষির অন্তর্ভুক্ত ৭ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একই দিনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা এর এই পদ্ধতি ৫৩ টি বিশ্ববিদ্যালয় একসাথে পরীক্ষা নিলেই কেবল সফল হিসেবে বিবেচিত হবে। সব বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার অন্তর্ভুক্ত না হলে আগের নিয়মে পরীক্ষা নেওয়া উচিত। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা ফিরে আসার পাশাপাশি আঞ্চলিকতা বন্ধ হবে। ফলে শিক্ষার্থীরা স্বল্প সময়ে ভর্তি হয়ে ক্লাস করতে পারবে।